কারা কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ড্রাগ কাউন্সেলিং বিষয়ক প্রশিক্ষক প্রশিক্ষণ

‘রুল অব ল’ প্রোগ্রাম, জিআইজেড বাংলাদেশ-এর কারিগরি সহায়তায় ও জার্মান ফেডারেল মিনিস্ট্রি ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন এন্ড ডেভেলপমেন্ট (বিএমজেড) এবং ব্রিটিশ সরকারের ফরেন, কমনওয়েলথ এন্ড ডেভেলপমেন্ট অফিস (এফসিডিও) এর অর্থায়নে বাংলাদেশ কারা অধিদপ্তর ও আহ্ছানিয়া মিশনের যৌথ আয়োজনে কারা কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের চার দিন ব্যাপি ‘ড্রাগ কাউন্সেলিং বিষয়ক প্রশিক্ষক প্রশিক্ষণ’ ১২ সেপ্টেম্বর ২০২২ সোমবার কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ এর প্রশিক্ষণ কক্ষে শুরু হয়েছে। উক্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশিক্ষণে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-১, ২, কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগার এবং কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের মোট ১২ জন কর্মকর্তা/কর্মচারী ও ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের ০৬ জন কর্মকর্তাসহ মোট ১৮ জন অংশ গ্রহণ করেন।

প্রশিক্ষণের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন,  জনাব আমীরুল ইসলাম, সিনিয়র জেল সুপার (ভারপ্রাপ্ত), কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২; জনাব হালিমা খাতুন, সিনিয়র জেল সুপার কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগার; জনাব নূরুন্নবী ভূইয়া, সিনিয়র জেল সুপার, কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-১। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব খান মোহাম্মদ ইলিয়াস, সেন্টেন্স প্লানিং অফিসার, ‘রুল অব ল’ প্রোগ্রাম, জিআইজেড বাংলাদেশ এবং তিনি এই প্রশিক্ষণের শুভ উদ্ভোধনও ঘোষনা করেন। আরও, উপস্থিত ছিলেন উক্ত প্রকল্পের প্রকল্প সমন্বয়কারী (আহ্ছানিয়া মিশন) জনাব আইয়ুব খান।

এই সময় জনাব আমীরুল ইসলাম, সিনিয়র জেল সুপার, সিনিয়র জেল সুপার (ভারপ্রাপ্ত), কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ তার বক্তব্যে বলেন, কারাগারে সেবার মান বৃদ্ধিতে এই প্রশিক্ষণ অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা রাখবে। কারাগারের সেবার মান উন্নয়নে বর্তমান সরকার বদ্ধ পরিকর। তাই সরকার কারাগারে যে সেবামূলক কাজ করছে ইহাকে আরও কার্যকর ও বেগবান করার জন্য এ ধরণের প্রশিক্ষণ আয়োজনের কোন বিকল্প নেই বলে তিনি মনে করেন। তিনি অংশগ্রহণকারীদেরকে অত্যন্ত মনোযোগ ও যত্ন সহকারে প্রশিক্ষণটি গ্রহনের জন্য পরামর্শ প্রদান করেন। উপস্থিত জিআইজেড প্রতিনিধি খান মোহাম্মদ ইলিয়াস, তার বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশের কারাগারসমূহ প্রতিনিয়ত পরিবর্তন ও বন্দিদের উন্নয়নের জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন এবং জিআইজেড এই কাজে কারাগারের সাথে সম্পৃক্ত হতে পেরে অত্যন্ত আনন্দিত ও গর্বিত। তিনি আরও বলেন এই প্রশিক্ষণটি প্রকৃত অর্থে অন্যান্য সাধারণ প্রশিক্ষনের মত নয়। যেহেতু, অংশগ্রহণকারীবৃন্দ (ভবিষ্যৎ প্রশিক্ষক) নিকট ভবিষ্যতে অনুরূপ প্রশিক্ষণ কারাগারের অন্যান্য কর্মী/কর্মকর্তাদের মাঝে প্রদান করবেন, তাই অংশগ্রহণকারীবৃন্দ যাতে করে অত্যন্ত মনোযোগ সহকারে প্রতিটি সেশনের পাঠ গ্রহন করেন এবং প্রশিক্ষকের নির্দেশনাসমূহ সঠিকভাবে পালন ও লালন করেন। তবেই, তাঁরাও (অংশগ্রহণকারীবৃন্দ) এক-এক জন দক্ষ মাদক কাউন্সেলিং বিষয়ক প্রশিক্ষক এবং পাশাপাশি মাদক কাউন্সেলার হিসেবে নিজেকে তৈরী করতে পারবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। ফলোশ্রুতিতে, কারাগারের দক্ষ কর্মী বাহিনীদের দ্বারা কারাগার প্রকৃত অর্থেই সংশোধনাগার হবে এবং কারাগারের মূলমন্ত্র/রুপকল্প “রাখিব নিরাপদ, দেখাবো আলোর পথ” বাস্তবিক রূপ পাবে। তিনি প্রিজন্স ডিরেক্টরেট বিশেষ করে কারা মহাপরিদর্শক ও অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক, এআইজি-প্রশিক্ষণ ও ক্রীড়া, কাশিমপুরের চারটি কেন্দ্রীয়কারাগারের কর্মকর্তাবৃন্দ এবং ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন, পাশাপাশি অনেক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

প্রশিক্ষণের উদ্দেশ্য উল্লেখ করে ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের প্রকল্প সমন্বয়কারী জনাব আইয়ুব খান বলেন, প্রশিক্ষণ শেষে প্রশিক্ষনার্থীরা নিজেরাই একজন দক্ষ প্রশিক্ষক ও কাউন্সেলার হিসেবে গড়ে উঠবেন, যা তাদের নিজ নিজ কর্মস্থলে প্রয়োগ করতে পারবেন। এছাড়া, কারাগারে মাদক গ্রহণের ফলে ক্ষতিগ্রস্থ কারাবন্দিদের নিয়ে যে সকল অসুবিধা হয় তা সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে দুর করতে পারবে বলে আমাদের বিশ্বাস।

প্রশিক্ষণটিতে ড্রাগ কাউন্সেলিং বিষয়ে বিশেষজ্ঞ প্রশিক্ষক এবং রিসোর্স পার্সন হিসেবে অধিবেশন পরিচালনা করবেন, মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কেন্দ্রীয় মাদকাসক্তি চিকিৎসা কেন্দ্রের সাবেক আবাসিক মনোচিকিৎসক এবং এডিকশন প্রফেশনাল ডা. মোঃ আখতারুজ্জামান; ইন্টারন্যাশনাল সার্টিফাইড এডিকশন প্রফেশনাল এবং জাতীয় মাদক বিরোধী কমিটির সদস্য ও গ্লোবাল মাস্টার ট্রেইনার জনাব ইকবাল মাসুদ; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মনোবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোঃ সেলিম হোসেন; ইন্টারন্যাশনাল সার্টিফাইড এডিকশন প্রফেশনাল এবং “আমার হোম” ড্রাগ এডিকশন ট্রিটমেন্ট সেন্টারের প্রোগ্রাম ডাইরেক্টর, মোঃ তানভীর আহমেদ; ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের সিনিয়র সাইকোলজিস্ট রাখি গাঙ্গুলী। এছাড়া প্রশিক্ষণার্থীদের প্রশিক্ষক হিসেবে দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য জনাব খান মোহাম্মদ ইলিয়াস ও জনাব আইয়ুব খান অধিবেশন পরিচালনা করবেন। উক্ত প্রশিক্ষণটি সফল করার জন্য সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন প্রকল্পের প্রকল্প সমন্বয়কারী জনাব আইয়ুব খান ও ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের অন্যান্য সহকর্মীবৃন্দ।   

Post Author: hsdam

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *