আইনের মাধ্যমে ই-সিগারেট বন্ধের দাবী জানিয়েছে ই-কমার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব)। ১১ মে দুপুরে ই-ক্যাব ও ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের যৌথ উদ্যোগে অনুষ্ঠিত এক অনলাইন সেমিনারে এ দাবী জানানো হয়। সেমিনারের আলোচ্য বিষয় ছিল- ‘তামাকমুক্ত বাংলাদেশ ২০৪০ গঠনে আইন সংশোধন : প্রসঙ্গ ই-সিগারেট’।
ই-ক্যাবের যুগ্ম সম্পাদক নাসিমা আক্তার নিশার সভাপতিত্বে সেমিনারে আলোচক হিসেবে ছিলেন জেনারেল ম্যানেজার জাহাঙ্গীর আলম শোভন, এফ কমার্স এলায়েন্সের সদস্য হুরাইরা শিশির, মেম্বার ওয়েলফেয়ার স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার জাকির হোসেন, ইনভেস্টমেন্ট স্ট্যান্ডিং কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান ফারহা মাহমুদ তৃণা, কর্পোরেট এ্যাফেয়ার স্ট্যান্ডিং কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান হোসনে আরা খান নওরীন, রুরাল ই-কমার্স স্ট্যান্ডিং কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান জাহিদুজ্জামান সাইদ, কমপ্লেইন্ট ম্যানেজমেন্ট এন্ড লিগ্যাল ইস্যু স্ট্যান্ডিং কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান খন্দকার হাসান শাহরিয়ার, সদস্য এসকে নুরুল হুদা, ক্যাম্পেইন ফর টোবাকো ফ্রি কিডস বাংলাদেশের গ্র্যান্টস ম্যানেজার আবদুস সালাম মিয়া, সিনিয়র পলিসি এ্যাডভাইজার মোঃ আতাউর রহমান মাসুদ এবং ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের স্বাস্থ্য সেক্টরের সহকারী পরিচালক মোঃ মোখলেছুর রহমান।
ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের তামাক নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের প্রোগ্রাম অফিসার শারমীন আক্তার রিনির সঞ্চালনায় সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের তামাক নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের প্রকল্প সমন্বয়কারী মোঃ শরিফুল ইসলাম।
সেমিনারে ক্যাম্পেইন ফর টোবাকো ফ্রি কিডস বাংলাদেশের গ্র্যান্টস ম্যানেজার আবদুস সালাম মিয়া বলেন, তামাক সবদিক দিয়েই ক্ষতিকর। বিশ^ স্¦াস্থ্য সংস্থা সিগারেট ছেড়ে দেবার উপায় হিসেবে ই-সিগারেটকে স্বীকৃতি দেয়নি। ভারতে এটি পুরোপুরি নিষিদ্ধ। পৃথিবীর আরো অনেক দেশেও ই-সিগারেট ক্ষতিকর বলেই নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আমাদের দেশেও আইন করে ই-সিগারেট নিষিদ্ধ করা এখন সময়ের দাবি। ই-ক্যাব ই-সিগারেটকে ব্যবসা হিসেবে না দেখে এটাকে ক্ষতিকর বিবেচনা করে বন্ধের উদ্যোগ নিয়েছে। এজন্য ই-ক্যাবকে সাধুবাদ জানাচ্ছি।
ক্যাম্পেইন ফর টোবাকো ফ্রি কিডস বাংলাদেশের সিনিয়র পলিসি এ্যাডভাইজার মোঃ আতাউর রহমান মাসুদ বলেন, বিশে^র ২৫টি দেশে ইতিমধ্যে ই-সিগারেট পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। অন্য দেশগুলোতেও এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা রয়েছে। আমাদের দেশে এখন পর্যন্ত ই-সিগারেট বন্ধে কোন আইন নেই। জনস্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে সংশ্লিষ্টদের উচিত এ ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের স্বাস্থ্য সেক্টরের সহকারী পরিচালক মোঃ মোখলেছুর রহমান বলেন, ই-সিগারেট বর্তমান প্রজন্মের কাছে স্টাইল ও আভিজাত্যের প্রতীক। আর যুব সমাজ যেহেতু অনলাইনের উপর অনেকাংশেই নির্ভরশীল, সুতরাং অনলাইনে তামাকজাত পণ্যের সহজলভ্যতা তাদেরকে ই-সিগারেটের প্রতি আরো উৎসাহিত করবে। অনলাইনে ই-সিগারেটসহ তামাকজাত পণ্যের বিক্রয় বন্ধে ই-ক্যাব এক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখতে পারে।
ই-ক্যাবের জেনারেল ম্যানেজার জাহাঙ্গীর আলম শোভন বলেন, সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে ব্যবসায়ীদের উচিত সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য ক্ষতিকর এমন কিছু বিক্রয় না করা। অন্তত নৈতিক দিক বিবেচনা করে হলেও ব্যবসায়ীদের উচিত তামাকজাত পণ্যে বিক্রয় না করা। ই-ক্যাবের সদস্যদের কাছে আমার এ ব্যাপারে অনুরোধ থাকবে যাতে আমরা ই-সিগারেট সহ তামাকজাত পণ্য বিক্রয় করা থেকে বিরত থাকি। ইতিমধ্যে ডিজিটাল কমার্স নির্দেশিকা ২০২১ এ ই-সিগারেট নিষিদ্ধের বিষয়টি যুক্ত করে দেয়া হয়েছে। আসন্ন বাজেটেও ই-ক্যাবের পক্ষ থেকে আমরা ই-সিগারেটকে নিষিদ্ধ করার জন্য এনবিআরকে অনুরোধ করেছি।
ই-ক্যাবের যুগ্ম সম্পাদক নাসিমা আক্তার নিশা বলেন, তরুণ প্রজন্মকে রক্ষার্থে ই-সিগারেট বন্ধের জন্য আমরা যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করবো। ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনকে ধন্যবাদ এই ধরণের উদ্যোগ নেবার জন্য। আর ই-ক্যাবের সদস্যদের প্রতি অনুরোধ তারা যেন অনলাইনে ই-সিগারেট বিক্রয় থেকে বিরত থাকেন।
প্রসঙ্গত, প্রায় দেড় হাজার সদস্য নিয়ে ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রিতে ই-ক্যাব শক্ত অবস্থানে রয়েছে। আর ১৯৯০ সাল থেকে ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন তামাক নিয়ন্ত্রণে কাজ করে যাচ্ছে। তামাক নিয়ন্ত্রণে এবার উভয় প্রতিষ্ঠানের একত্রে কাজ করার অঙ্গীকার ২০৪০ সালে দেশকে তামাক মুক্ত করা জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণাকে আরো বেগবান করবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।FacebookTwitterLinkedInPinterestShare

Post Author: hsdam

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *